বার্সেলোনার প্রথম চ্যাম্পিয়নসলীগ
----রুমেল (১০.১২.১৬)
আমাকে যদি টাইম মেশিন দিয়ে জিজ্ঞাসা করা হত তবে আমি কিছু চিন্তা না করেই বলে দিতাম ১৯৯২ চ্যাম্পিয়নস লীগ ফাইনাল ম্যাচের দিনটিতে।লাইভ দেখতে চাইতাম প্রিয় ক্লাবের প্রথম চ্যাম্পিয়নস লীগ জয়ের মুহুর্তটিকে।১৯৯২ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লীগে বার্সেলোনাকে দেখার সৌভাগ্য আমাদের কারোই হয়নি।তবে নিজের মত করে ১৯৯২ সালের বার্সেলোনা সকল ম্যাচ নিজের মত করে তুলে ধরার চেস্টা করলাম
জাতীয় লীগে সাফল্য অর্জন করতে খুব বেশি সময় নেয়নি ক্লাব টি।কিন্তু ইউরোপের সবচেয়ে মর্যাদার আসর
ইউরোপিয়ান কাপ(চ্যাম্পিয়নস লীগ) শুরু হবার পর বার্সেলোনার সাফল্য আসে একটু দেরিতেই। ১৯৬১ ও ১৯৮৬ সালে শিরোপারর খুব কাছে গিয়েও ফাইনালে হেরে হতাশ হতে হয়েছে কাতালান দের।
তবে ১৯৯২ সালে আর হতাশ করেনি বার্সেলোনা। প্রয়াত বার্সা লিজেন্ড ইয়োহান ক্রুইফ এর অধীনে বার্সেলোনা জয় করে তাদের প্রথম ইউরোপিয়ান শিরোপা।
১৯৯২ সালের ইউরোপিয়ান কাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ইউরোপের বিভিন্ন লীগের মোট ৩২ টি ক্লাব নিয়ে।
তখন ইউরোপিয়ান কাপের সিস্টেম ছিল অনেকটাই ভিন্ন। প্রতিযোগিতা শুরু হত নক-আউট রাউন্ড এর মত।
৩২ টি দল লটারীর মাধ্যমে দুই ভাগ করে খেলানো হত।
টুর্নামেন্ট শুরু হতো ১ম রাউন্ড দিয়ে। ১ম রাউন্ড যেখানে হারলে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় আর জিতলে ২য় রাউন্ড।প্রতিটি রাউন্ডে হোম ও এওয়ে ম্যাচ এর ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হত।
২য় রাউন্ডে একই ভাবে উত্তির্ন দলের মধ্যে লটারীর মাধ্যমে ভাগ করে খেলা হত।২য় রাউন্ড হতে অবশিষ্ট ৮ টি দল কে লটারীর মাধ্যমে ৪ দল করে দুই গ্রুপে ভাগ করা হত এবং এই দুই গ্রুপের মধ্যে সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জনকারী দুই দল সরাসরি ফাইনালে খেলতো।
#বার্সেলোনার_১ম_রাউন্ড:
বার্সেলোনা প্রথম রাউন্ডে মুখোমুখি হয় জার্মান ক্লাব এফসি হানসা র।
১ম রাউন্ডে প্রথম লেগে ন্যু-ক্যাম্পে বার্সেলোনা ৩-০ গোলে হারায় এফ সি হানসা কে।
বার্সার হয়ে দুটি গোল করেন মাইকেল লাউড্রপ,অন্যটি করেন গোয়িকয়েটসিয়া
২য় লেগে হানসার হোম গ্রাউন্ডে বার্সেলোনা ১-০ গোলে হারলেও দুই লেগে ৩-১ এগ্রিগেটে বার্সেলোনা চলে যায় ২য় রাউন্ডে
#২য়_রাউন্ডঃ ২য় রাউন্ডে বার্সেলোনা মুখোমুখি হয় আরেক জার্মান ক্লাব কাইসারসেলুটার্ন এর।
১ম লেগঃ ন্যু-ক্যাম্প,বার্সেলোনাঃ
প্রথম লেগে ন্যু-ক্যাম্পে বার্সেলোনা ২-০ গোলে জয় লাভ করে।বার্সার হয়ে দুটি গোলই করেন আইতোর বেগিরিস্টেন।
২য় লেগঃওয়াল্টার স্টেডিয়াম, কাইসারসেলুটার্নঃ
প্রথম লেগে ২-০ গোলের জয়ে সহজ পরিসংখ্যান নিয়ে ২য় লেগ খেলতে নামে বার্সেলোনা।
কিন্তু কাইসারসেলুটার্ন এর মাঠে ২য় লেগে বার্সেলোনা ৩৫, ৪৮,৭৬ মিনিটে তিনটি গোল কনসিড করে। এই স্কোর লাইনে ম্যাচ শেষ হলেই এগ্রিগেটে ৩-২ গোলে বিদায় নেবে বার্সা। সব কিউলেস মধ্যে যখন আরেকটি দুঃসপ্নের ইউরোপিয়ান কাপ শেষ হতে যাচ্ছিল তখন ম্যাচের ৮৭ মিনিটে জোসে মারি বাকিরো বার্সার হয়ে অতি মুল্যবান একটি গোল করলেন ।খেলা শেষে স্কোর লাইন বার্সা ১-৩ কাইসার।দুই লেগ মিলে স্কোর লাইন বার্সা ৩-৩ কাইসারসেলুটার্ন কিন্তু বাকিরোর সেই এওয়ে গোলে ৩য় রাউন্ডে বার্সেলোনা
#৩য়_রাউন্ড (গ্রুপ স্টেজ)ঃ ৩য় রাউন্ডে উত্তির্ন ৮ টি দল কে লটারীর মাধ্যমে A ও B দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়।
গ্রুপ বি তে বার্সেলোনার সাথে ছিল পর্তুগীজ ক্লাব বেনিফিকা,চেক রিপাবলিকান ক্লাব স্পার্তা প্রাহা,ও ইউক্রেন এর ক্লাব ডায়নামো কিয়েভ।
এই গ্রুপ থেকে হোম ও এওয়ে হিসাবে প্রত্যেক দল দুই বার মুখোমুখি হয়। পয়েন্ট সিস্টেমে ছিল একটু ভিন্ন।প্রতিটি ম্যাচ জয়ের জন্য ২ পয়েন্ট ও প্রতিটি ড্র এর জন্য ১ পয়েন্ট।এই গ্রুপের সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট অর্জন কারী দল খেলবে ফাইনালে
#৩য়_রাউন্ড_১ম_ম্যাচঃ
বার্সেলোনা বনাম স্পার্তা প্রাহা
ন্যু-ক্যাম্প,বার্সেলোনা
৩য় রাউন্ড এর প্রথম ম্যাচে ন্যু-ক্যাম্পে স্পার্তা প্রাহার মুখোমুখি হয় বার্সেলোনা। ম্যাচের ১৬ মিনিটে জুলের্মো অমোর এর গোল লিড নেয় বার্সেলোনা। কিন্তু ঠিক ২ মিনিট পরেই
ভারবেক এর গোলে সমতায় ফেরে প্রাহা।খেলার ৩৪ ও ৬৩ মিনিটে এনরিক লাউড্রপ ও জোসে বাকিরোর গোলে ব্যবধান ৩-১ করে বার্সেলোনা। ৬৭ মিনিটে বার্সেলোনা আরেকটি গোল কনসিড করলেও ৩-২ গোলের জয় দিয়ে ৩য় রাউন্ডের শুভ সুচনা করে বার্সেলোনা।
#৩য়_রাউন্ড_২য়_ম্যাচঃ
বেনিফিকা বনাম বার্সেলোনা(এওয়ে)
এস্তোদিও এস এল বেনিফিকা
৩য় রাউন্ডের ২য় ম্যাচে পর্তুগিজ ক্লাব বেনিফিকার মুখোমুখি হয় বার্সেলোনা। বেনিফিকার মাঠে এই ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ হয় দু দল পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নেয়।
দুই ম্যাচে ১ জয় ও এক ড্র তে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে বার্সেলোনা।
#৩য়_রাউন্ড_৩য়_ম্যাচঃ
ডায়নামো কিয়েভ বনাম বার্সেলোনা(এওয়ে)ঃ
স্টেডিওন ডায়নামো ইম
৩য় ম্যাচে ডায়নামো কিয়েভ এর মাঠে মুখোমুখি হয় বার্সেলোনা। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে গোল মেশিন রিস্টো স্টয়চকভ এর গোল এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে জোসে বাকিরোকে বদলি করে জুলিও স্যালিনাস কে মাঠে নামান কোচ ইয়োহান ক্রুইফ।তার এই সাবটিটিউড খুব দ্রুতই কাজ করে।ম্যাচের ৬৭ মিনিটি স্যালিনাস এর গোলে ২-০ এগিয়ে যায় ও জয় লাভ করে।
৩ ম্যাচে ২য় জয়,১ড্র তে ৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে চলে যায় বার্সেলোনা।
৩ পয়েন্ট নিয়ে স্পার্তা প্রাহা ২য় স্থানে,সমান ২ পয়েন নিয়ে ৩য় কিয়েভ, ৪র্থ বেনিফিকা
#৩য়_রাউন্ড_৪র্থ_ম্যাচঃ
বার্সেলোনা বনাম ডায়নামো কিয়েভঃ
ভেন্যুঃ ন্যু-ক্যাম্প
ডায়নামো কিয়েভের সাথে প্রথম দেখায় এওয়ে ম্যাচে ২-০ তে জয়ের পর ন্যু-ক্যাম্পে আবার মুখোমুখি বার্সা ও কিয়েভ।
প্রতিদন্দিতা পুর্ন প্রথম হাফে গোল শুন্য থাকে দু দলই। দ্বিতীয় হাফের শুর থেকেই নিজেদের মেলে ধরতে শুরু করে বার্সা এবং ফল সরুপ ম্যাচের ৫৪ মিনিটে স্টয়চকভ এর গোলে এগিয়ে যায় বার্সা।ম্যাচের ৮২ মিনিটে নিজের ও বার্সা হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন স্টয়চকভ আর ম্যাচের ৮৮ মিনিটে বদলি প্লেয়ার স্যালিনাসের গোলে ৩-০ গোলের সহজ জয় পায় বার্সা।
৪ ম্যাচে ৩য় জয়,১ড্র তে ৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই বার্সেলোনা।
২য় স্থানে প্রাহা,৩য় ও ৪র্থ বেনিফেকা ও কিয়েভ
#৩য়_রাউন্ড_৫ম_ম্যাচঃ
স্প্রাতা প্রাহা বনাম বার্সেলোনা(এওয়ে)
ভেন্যুঃস্টেডিওন লেটনা, প্রাহা
৩য় রাউন্ড এর ৫ম ম্যাচে ফাইনালে যাওয়ার সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হয় বার্সেলোনা। বার্সা জিতলেই ফাইনালে আর হারলে সুযোগ রয়ে যাবে বাকিদের।
এই ম্যাচে প্রথম হাফে গোল করতে পারেনা কোন দলই।
ম্যাচের ৬৭ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় প্রাহা।এই গোল আর পরিশোধ করতে না পারায় ১-০ গোল হেরে যায় বার্সা।
৫ ম্যাচ শেষে ৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই থাকে বার্সা,২য় অবস্থানে প্রাহা
#৩য়_রাউন্ড_৬ষ্ঠ_ম্যাচঃ
বার্সেলোনা বনাম বেনিফিকা
ভেন্যুঃনূ-ক্যাম্প,বার্সেলোনা
ফাইনালে যাওয়ার জন্য এই ম্যাচে অবশ্যই জয় প্রয়োজন ছিল বার্সার কারন হারলে অথবা ড্র করলে রাউন্ডের অপর ম্যাচে প্রাহা জিতলে বার্সা পয়েন্ট টেবিলে ২য় অবস্থানে চলে যাবে এবং ফাইনালে চলে যাবে প্রাহা।
এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে খেলতে নেমে খুব দারুন ভাবে শুরু করে বার্সেলোনা। ম্যাচের ১২ মিনিটে রিস্টো স্টয়চকভ এর গোলে এগিয়ে যায় বার্সা। ম্যাচের ২৩ মিনিটে বার্সার হয়ে ২য় গোল করেন বাকিরো।২ গোলে পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ফেরার চেস্টা করে বেনিফিকা এবং ২৭ মিনিটে ব্রিতো বেনিফিকার হয়ে একটি গোল পরিশোধ করেন।ম্যাচের বাকি সময়ে আর কোন দলই গোল করতে না পারায় ২-১ গোলের জয় পায় বার্সেলোনা।
এই গ্রুপ থেকে ৬ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষ দল হিসেবে ৩য় বারের মত ইউরোপিয়ান কাপ বা চ্যাম্পিয়নস লীগের ফাইনালে চলে যায় বার্সেলোনা।
অপর গ্রুপ থেকে শীর্ষ দল হিসেবে ফাইনালে যায় সাম্পদোরিয়া।
আরো একবার চ্যাম্পিয়নস লীগের ফাইনালে বার্সেলোনা।সব কিউলসদের মধ্যে নিশ্চই একটি কথাই ঘুরছিল যে এবার কি হবে সপ্ন জয় নাকি বাড়বে অপেক্ষা।ক্রুইফের বার্সেলোনাকি পারবে এবার ইতিহাস গড়তে???সব প্রশ্ন আর ভয় মাথায় ঘুরছিল।
ফাইনালে ক্রুইফের প্রথম একাদশে ছিলেনঃ
জুবিযারেতা(C),কোয়মেন,ফেরার,মুনেজ,ইউসেবিও,গার্ডিওলা,জুয়ান কার্লোস,বাকিরো,লাউড্রপ,স্যালিনাস,স্টয়চকভ
সাবটিটিউড হিসেবে ছিলেনঃজোসে রামন,কার্লোস বুস্কেটস,এন্তনিও,আইতোর,মিগুয়েল
খেলার শুরু থেকেই দুই দল গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে।প্রথম হাফের সেরা খেলা উপহার দেয় বার্সাই।বার্সার জন্য সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাড়ায় সাম্পদোরিয়ার গোলরক্ষক পাউলিউসা।প্রথম হাফে পেনাল্টি বক্সের কিছুটা দুরে ফ্রি কিক পায় বার্সেলোনা, কোয়মেনের ফ্রি কিক অসাধারন ভাবে রুখে দেয় পাউলিউসা।পাল্টা আক্রমনে যায় সাম্পদোরিয়া। কর্নার থেকে আসা বল থেকে সট রুখে দিয়ে নিশ্চিত গোল বাচিয়ে দেন বার্সা কিপার জুবিযারেতা।আবার এটাকে বার্সা।ডান প্রান্ত থেকে ইউসেবিওর ক্রস থেকে হেড নেন স্যালিনাস। এবার ও রুখে দেন পাউলিউসা।
প্রথম হাফে স্কোর লাইন ০-০।
দ্বিতীয় হাফের শুরুতেই এটাকে যায় বার্সা।স্টয়চকভ প্রায় ৩,৪ জনকে কাটিয়ে সট নেন এবং আবার ও পাউলিউসার সেভ।তার ২ মিনিট পরেই স্যালিনাসের সট আবার রুখে দেন পাউলিউসা।পাল্টা আক্রমন থেকে সাম্পদোরিয়া স্ট্রাইকার গোলের সহজ সুযোগ কে নস্ট করেন বারের উপর দিয়ে মেরে।
আবার এটাকে বার্সা গার্ডিওলার ডিফ্রেন্স চেরা পাস থেকে বল পায় স্টয়চকভ। স্টয়চকভের সট এবার গোলকিপারকে অতিক্রম করলেও বাধা হয়ে দাড়ায় বারপোস্ট। পোস্টে লেগে ফিরে আসে বল।৬৫ মিনিটে ক্রুইফ প্রথম সাব ইউজ করে স্যালিনাসের বদলে এন্তনিও কে মাঠে নামায়।দ্বিতীয় হাফের শেষ দিকে ডান প্রান্ত দিয়ে সাম্পদোরিয়ার আক্রমন থেকে স্ট্রাইকারের সট রুখে দেন জুবিযারেতা। ৯০ মিনিট শেষ কোন দলই গোল করতে না পারায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।অতিরিক্ত সময়ে দুই দলই কিছুটা রক্ষনাত্মক ভাবে খেলতে থাকে, তেমন কোন গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনা কেউই।ম্যাচের ১১০ মিনিটে লাউড্রপ এর পাস থেকে বল পান ইউসেবিও।পেনাল্টি বক্সের বাইরে তাকে ফাউল করলে ফ্রি কিক পায় বার্সেলোনা। ফ্রি কিক নেয়ার জন্য বলের সামনে কোয়মেন,স্টয়চকভ, লাউড্রপ। প্রথম বারের দুরুহ কোনে জোড়ালো সট নিলেন কোয়মেন এবং গোলকিপার কে অতিক্রম করে বল সাম্পদোরিয়ার জালে।১১২ মিনিটে কোয়মেনের গোলে বার্সেলোনা ফাইনালে লীড নিল।গোল কনসিড করে পরিশোধের আপ্রান চেস্টা করে সাম্পদোরিয়া। কিন্তু বার্সা ডিফেন্স রুখে দেয় সব চেস্টাই এবং রেফারির শেষ বাশীর সাথে সৃস্টি হয় নতুন ইতিহাসের।প্রথম বারের মত ইউরোপ সেরা হয় #এফসি_বার্সেলোনা।ইউরোপে সেরা ক্রুইফের বার্সেলোনা।
এরপর ২০০৬,২০০৯,২০১১,২০১৫ সালে ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগ জয় করে বার্সেলোনা।
0 comments:
Post a Comment